সৌম্যদ্বীপ সাহা। উদীয়মান কবিদের মধ্যে অন্যতম মুখ। মুক্তাক্ষর সাহিত্য স্রোত এর এক জ্বলন্ত কান্ডারী। তার তিনটি কবিতা রইল।
১.
চূড়ান্ত এক পরিণতি
সৌম্যদ্বীপ সাহা
একদিন শুকাবে, সত্যিই শুকাবে
সব নুন-এ ভেজা বালিশগুলো;
সময়ের কবলে মলিন হবে হয়তো বা তার রং
কিন্তু ভিজে থাকবে না।
আর সেই দ্রষ্টার দৃষ্টিকোঠরের
নদীখাতও হবে শুষ্ক,
হয়তো বা নেমে আসবে কোন কোমল স্পর্শ
নয়তো জলের উৎপাদন হবে বন্ধ।
ঠিক যেভাবে ধূসর শীতের শুষ্ক কাষ্ঠে
বসন্ত দেয় লেপে গাঢ় শ্যামলতা।
নরম পাতা হয় জাগ্রত
নয়তো বা সবুজ পরগাছা
তারে গিলতে থাকে অবিরত।
অবসান ঘটবেই,
আসবেই চূড়ান্ত এক পরিণতি!!
২.
অপূর্ণ পূর্ণতা
সৌম্যদ্বীপ সাহা
বিরহ যবে চিরন্তন করে প্রভু,
ভৃগুতট তবে ধারণ করে কৃষ্ণ!
অপ্রাসঙ্গিক দর্শন লাগি তনু-মন হয় চঞ্চল,
অর্ণব করে মহান নিজেকে, বাড়ায় বাহুদল।
বড় কিঞ্চিৎ ঠেকে আপনা তবু,
অপূর্ণ দর্শনে চন্দ্রিমায়।
দীর্ঘ যামিনীর স্নিগ্ধতায়,
তটে আসে প্রতিফলন।
জোয়ার ঘটে মনে, পাইনা স্পর্শ তোমার....
পিত বসন তব, বড্ড লোভ দেখায় অন্তরে।
তট হয় প্লাবিত, ম্লান হয় না কৃষ্ণ!
ভরা কোটালে যবে পূর্ণরূপ হেরি,
হৃদয় হয় উত্তাল মম,
স্রোত ছুঁতে চায় তোমায়।
অবুঝ চিত্ত জানে, পায় না তবু তোমায়।
ক্ষণে ক্ষণে ভাবি, ঢাকিব সৈকত.....
বৃথা বৃথা সাজা নিগ্রো,
সময় এলে, পুনঃ পরে প্রতিফলন;
ঢাকা হয় তবে নিঃস্ব।
পারিনা রুখতে জোয়ার;
পেতে চাই, তবু পাই না...
অতএব গাঢ় হতে থাকে আঁধার,
এই সায়রের ভবিতব্য।।
৩.
শীতের ভোর
সৌম্যদ্বীপ সাহা
শিশির পড়েছে পাতার বুকে,
নদীর জন্ম প্রতি ভোরে;
সূর্যের আভার সাথে লড়াই করে
এখনো নিঃস্ব হয়নি নদী,
ঘাসের আগায় হিরে!
কৃষকের পায়ের চাপে ভেঙে চুরমার,
কাকের ডাক সুপ্ত খড়ের নীড়ে।
ডাকের চাপে রানার ছুটেছে
দিগন্ত বিস্তৃত পথ ধরে,
তবে স্বপ্ন এখনও চারটি নয়ন জুড়ে।
শান্তিময় শুধু সেই সুখের ঘুমে ডুবে
নরম-গরমে দুটি প্রাণ, দুটি হৃদয় মিলেমিশে
জানা নেই কোন অজ্ঞাত উপায়
প্রেম তরঙ্গ অবাধে যায় বয়ে।।
0 মন্তব্যসমূহ