তিনটি কবিতা । সুরাবুদ্দিন সেখ সোহরাব

সুরাবুদ্দিন সেখ সোহরাব। কবিতা লেখার একটা আলাদা তেজ রয়েছে তার। হাত দিলে কিছু না কিছু নতুন খুজে ফেলেন। মুক্তাক্ষরকে দিয়েছে তার তিনটি কবিতা। সেগুলো রইল। 


১,
বাসন্তী চাঁদনি রাতে

সুরাবুদ্দিন সেখ সোহরাব


ফাগুন মাসের চাঁদনি রাতে মনটা আমার ব্যাকুল
রূপের রাতে উঠান গাছে নজর পড়ে মুকুল
ঐ বাসন্তী আজকে রাতে তোমার এত রূপ!
জ্বলন্ত হৃদয় শীতল হলো নিভে গেছে ধুপ।


সবকিছু আজ ছেড়ে আমি হলাম মহাসাধক
প্রেমের টানে নিভৃত স্থানে পড়ে না আঁখির পলক,
দূর নীলিমায় হাসছো তুমি হাসি আমার মুখে
তোমার কবিতা পড়বে মনে থাকবো আমি সুখে।

রূপালী রাতে মনটা আমার যায় যে অনেক দূর
মনের কোণে জমা হয় ভিন্ন গানের সুর,
একলা আমি নির্জনেতে হই যে নিশাচর
কেউ জানে না কেউ বোঝে না জাগি নিশাভর।
অন্য রাতে জাগে না আমার প্রেমের আঙিনা
আসছে সময় বসবে আবার বাসা ভাঙি না।



২,
দুই পৃথিবী

সুরাবুদ্দিন সেখ সোহরাব 


সবুজ দিগন্তপথে নেওলের রক্তমাখা মুখ
বেলার অন্তিমে আকাশ গায়ে আমি
এক ধরিত্রী সুখের পাহাড়,এক ধরিত্রী তিমির সারাক্ষণ
নীহারিকার মিটিমিটি কিরণ।
দুই পৃথিবীই আমার প্রাণ,আমার জীবনজ্যোতি।
সূর্য ডুবেছে বহুদিন...আর ওঠেনি
তরুলতা বৃক্ষরাজির অভাব।
এক পৃথিবীর সুন্দরেও ভালো নেই আমি
আমার শ্বাস -প্রশ্বাসে বাধা।
এক পৃথিবীতে সক্রিয় হলেও নিষ্ক্রিয় ঐ পৃথিবী,
ঐ পৃথিবীতেও সূর্য ওঠা খুবই প্রয়োজন
যা আমাকে পরপারের সুখের ঠিকানা বানাবে
দুই পৃথিবীতেই সূর্য উঠুক সবুজে ভরুক
খালি হবে অন্তর,
তাহলে প্রতিষ্ঠিত হবো হাসিমুখে।



৩,
আমার আগুনের ছাই

সুরাবুদ্দিন সেখ সোহরাব 


আমি দগ্ধিভূত,বৃষ্টি নামেনি।
নরম ছাই জমে জমে পাথর হয়ে গেছে
আমার হৃদয় পৃথিবীতে এক পাহাড় সৃষ্টি হয়েছে,
পারছি না সেই ভার বহন করতে।
এই পাহাড়ে মার্তন্ডের তাপ আর অনলের তাপে ক্ষরিত হৃদয়...
তবুও হইনি পরাস্ত,হাসিখুশি সর্বদা।
বলতে চাই না...হৃদয় পোড়ার গন্ধ পেলে ঘি ঢেলে অগ্নির ইন্ধন যোগায়।
এতে আরো ছাই জমে পাথর হয়,
হৃদয় পোড়াতে ব্যস্ত,নেভাতে উদ্যোগী নয়।
 মিত্রতার নামে জল বলে কেরোসিন ঢালে।
তবে কিছু প্রিয়জনের কাছে প্রশান্তি পাই 
তাঁরা সরিয়ে দেন ছাই।
একদিন এই ছাইয়ের পাহাড়ে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ভেঙে গুঁড়ো হয়ে তাদের হৃদয়ে আশ্রয় নেবে।
 তাদেরও জ্বলন্ত অগ্নিতে কেউ ঘি ঢালবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ